ডাক্তার আর ভগবান দুই নয় এক

অনেকে মনে করে ডাক্তাররা ভগবান, এবং ডাক্তাররা কোনোদিন রুগী হতে পারেন না কারণ যেহেতু তারা চিকিৎসাবিদ্যাটা জানেন।

কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, ডাক্তারদের শরীর ও মন দুটোই রক্ত মাংসের ই।

তাই তাদেরও রোগব্যাধি হতেই পারে এবং মানসিক রোগও তাদের হতেই পারে।

তাই আমার মতে ডাক্তারদের ভগবানের প্রতিমূর্তি তো দুরের কথা, মূর্তিও বলা যায় না

কারণ যতদূর জানি, একজন তথাকথিত সর্বশক্তিমান ভগবানের পক্ষে মানুষকে বাঁচানো চুটকির কাজ হলেও সেই কাজ আজ পর্যন্ত কোনো ডাক্তার কে আমি করতে দেখিনি।

আবার অন্যদিকে আমরা বহুবার দেখেছি পরিবারবর্গ আশা ছেড়ে দিয়েছে এমন রোগীকেও অবিশ্বাস্য দক্ষতায় সার্জারি করে ডাক্তাররা বাঁচিয়ে তুলেছেন।

আসলে বিভিন্ন ধর্মের ভগবানের যে ব্যক্তিত্ব আমাদের সামনে এসেছে তা থেকে একটা ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত যে ঐসব বইয়ের মতে ভগবান মানুষের জন্য এই বিশ্ব বানিয়েছে যাতে মানুষ একটু তাঁর আরাধনা/স্তব/স্তুতি একটু করে। অর্থাৎ এই সম্পর্ক দেওয়া নেওয়ার।

অন্যদিকে এমন অনেক ডাক্তারবাবু আছেন যারা বিনামূল্যে বা অতিসামান্য পারিশ্রমিকে তাঁদের পরিষেবা মানুষ কে দিয়ে থাকেন।
এখন হয়তো অনেকে বলবেন "অনেক খারাপ ডাক্তারও তো আছে",
তাহলে আমি বলব ঐসব বইয়ে বর্ণিত অনেক খারাপ ভগবান বা অপদেবতাও আছে!
বেশিরভাগ ধর্মের মোদ্দা কথা হল, একবার মরলেই হল! তাহলেই ভগবানের দর্শন পাক্কা! অন্যদিকে ডাক্তার-দর্শন জ্যান্ত থাকতেই করা যায়।
যারা ভগবানের আত্মরক্ষার্থে বলেন "দূর বোকা! মানুষের মত অতিতুচ্ছ প্রাণীর কাছে যখন-তখন ভগবান নিজে না এসে ডাক্তার/মোক্তার/আক্তার/পুলিশ/সেনা/পরোপকারী হিসাবে/রূপে আসে", তাদের ভাবা উচিত, মানুষ ভাল করলেই তার কৃতিত্ব যদি ভগবানকে দেওয়া হয়, তাহলে এইসব পেশায় নিযুক্ত মানুষ যখন খারাপ কাজ করে তার কৃতিত্বও দেওয়া উচিত।

বলাবাহুল্য ডাক্তার ভগবানের প্রতিমূর্তি ভাবলে তার অর্থ এটাই দাঁড়ায় যে, ভগবান আজ পর্যন্ত প্রচুর ঘুষ খেয়েছে, প্রচুর মানুষ মেরেছে, লোভে পড়ে অনেক রোগীকেই নিজের হাতে রেখে সর্বশান্ত করেছে!

তাই আমার মতে ডাক্তারদের শুধু মানুষ হিসাবে দেখাই ভালো।

Comments

Popular posts from this blog

অস্থি বিসর্জন কি এবং কেন

রোগ হরণী মা শীতলা

পবিত্র শালগ্রাম শিলা নিয়ে কিছু কথা